কক্সবাজার ভ্রমণ টিপস এবং সতর্কতা
সাজেক ভ্যালি ভ্রমন টিপস ও সতর্কতাঝাউ গাছের সারি, নরম বালির বিছানা, সামনে বিশাল সমুদ্র চখের সামনে। আপনি যদি কক্সবাজার যান তাহলে সকালে এবং বিকেলে সমুদ্র সৈকতের এই অপরূপ দৃশ্য দেখতে পাবেন। কক্সবাজারে রয়েছে নীল জল এবং ঢেউয়ের গর্জন সহ একটি মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকত। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। আপনারা যারা নিজেদের পরিবারের সাথে ভ্রমণ করতে চান তাদের লক্ষ্য করেই আমার এই পোস্ট।
মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, মাতার বাড়ি, শাহপরী, সেন্ট মার্টিন, কক্সবাজারকে করেছে আরও আকর্ষণীয় ও সুন্দর। মাতা মুহুরী, বাঁকখালী, রেজু, কুহেলিয়া ও নাফ নদী এই জেলার মধ্য দিয়ে গেছে। পর্যটন, বনায়ন, মাছ ধরা, শুঁটকি মাছ, শামুক, ঝিনুক এবং সিলিকা সমৃদ্ধ বালির জন্য কক্সবাজারের অবস্থান বিলাসবহুল পর্যটকদের তালিকার শীর্ষে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতঃ
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ নিরবচ্ছিন্ন সমুদ্র সৈকত স্থানীয় এবং বিদেশী পর্যটকদের মুগ্ধ করে তার মুগ্ধকর ঢেউ এবং মন্ত্রমুগ্ধ সূর্যাস্তের সাথে। জেনে নিন কক্সবাজার ভ্রমণ পরিকল্পনা, কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কোথায় খাবেন এবং কক্সবাজার ভ্রমণের সকল বিবরণ।
কক্সবাজার ভ্রমণের উপযুক্ত সময়ঃ
সাধারণত সবাই শীতকালকেই বেছে নেয় কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য। কিন্তু কক্সবাজার এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি বছরের যে কোনো সময় যেতে পারেন। এখানে সময়ে সময়ে প্রকৃতির পরিবর্তন হয়, প্রকৃতির এই রূপ কক্সবাজারেকে আরও সুন্দর করেছে।
তাই ভিন্ন স্বাদ পেতে বর্ষাকালে যেতে পারেন কক্সবাজার কিংবা শরতের নীল আকাশের মিতালীতে অথবা হেমন্তের কোনো পূর্ণিমার রাতে কক্সবাজারের রূপ অবশ্যই আপনাকে মুগ্ধ করবে। আর হ্যাঁ, শীতকাল ছাড়া গেলে একটা সুবিধা হবে। হোটেল ভাড়া থেকে প্রায় সবকিছু আপনি তুলনামূলকভাবে কম দাম পাবেন।
কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যানঃ
বাংলাদেশ ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে আকর্ষণের শীর্ষে রয়েছে কক্সবাজারের নাম। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত সহ, এই জেলাটি পাহাড়, নদী, ঝর্ণা এবং দ্বীপের বিস্ময়কর সংমিশ্রণে দেশী এবং বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এবং ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতে বিধ্বস্ত ঢেউ বা মন্ত্রমুগ্ধ সূর্যাস্তের সাথে একটি প্রলুব্ধকর মায়াজাল থেকে কম নয়। আজকের ট্যুর প্ল্যানে সম্পূর্ণ কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যান, কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কোথায় খাবেন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করব।
প্ল্যান একঃ
কক্সবাজারে দুই দিন এবং এক রাত ভ্রমণঃ
দুই দিনের প্ল্যানে যে সব জায়গা ঘুরে দেখবেন-
- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
- মেরিন ড্রাইভ
- হিমছড়ি
- ইনানী সমুদ্র সৈকত
- বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বিপ মহেশখালি
প্রথম দিনঃ যেহেতু আপনার হাতে ২ দিন এবং ১ রাত সময় আছে তাই রাতের বাসে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিন। কক্সবাজার পৌঁছে সকাল ১০-১১ টায় হোটেলে চেক-ইন করুন(রুম ফাকা থাকলে আগেও চেক ইন করতে পারবেন) এবং সমুদ্র দেখতে বেরিয়ে যান। দুপুর পর্যন্ত সমুদ্রের পানিতে গোসল করুন, ছবি তুলুন এবং দুপুর ২টার দিকে হোটেলে ফিরে আসুন।
আপনার হোটেলে বা কাছাকাছি কোন রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খান। খাওয়া শেষে কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর বিকেলে বেরিয়ে পড়ুন সমুদ্র দেখার জন্য।সারা বিকেলটা সমুদ্র সৈকতে কাটিয়ে হোটেলে ফিরে আসুন বা বার্মিজ মার্কেট ঘুরে আসতে পারেন। সন্ধ্যায় আপনি বেছে নিতে পারেন রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষি, নিরিবিলি, বোগদাদিয়া বা আপনার পছন্দের যেকোনো রেস্টুরেন্ট।
কক্সবাজার থেকে ঝাউতলা গেলে সেখানে অবস্থিত রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড ঘুরে আসতে পারেন। সকালে সূর্যোদয় দেখতে চাইলে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান।
দ্বিতীয় দিনঃ সকালের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত আরো অন্যরকম সুন্দর লাগে। এই সৌন্দর্য মিস করবেন না। তাই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে সৈকতে যান। আশা করছি আপনি একটি ভিন্ন সৈকত দেখতে পাবেন। নাস্তা করে ফিরে আসুন। আজকের দিনটিকে দুই ভাগে ভাগ করে নিন।
মহেশখালী সকালে যেতে পারেন এবং বিকেলে হিমছড়ি ও ইনানী সমুদ্র সৈকতে যেতে পারেন। আর যদি সকালে ট্যুরটি করতে না চান তবে বিকেলে মেরিন ড্রাইভ হয়ে পাটুয়ারটেক, হিমছড়ি এবং ইনানী ঘুরে আসুন।
সকালে মহেশখালী যেতে চাইলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রওনা দিন। মহেশখালী সম্পূর্ণ ঘুরতে প্রায় ৪ ঘন্টা সময় লাগবে। তাই সময় নিয়ে সতর্ক থাকুন। প্রথমে মহেশখালী ট্রলার ঘাটে যান। আপনি যদি ট্রলার যেতে না চান তবে আপনি একটি স্পিডবোট বুক করতে পারেন বা স্থানীয় ট্রলারে যেতে পারেন। মহেশখালী ঘুরে দুপুরের আগেই কক্সবাজারে ফিরুন। দুপুরের খাবারের পর অটো বা সিএনজি নিয়ে হিমছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিন।
পাটুয়ারটেক হিমছড়ি এবং ইনানী দেখার জন্য আপনাকে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা সময় দেওয়া উচিত। মেরিন ড্রাইভ দিয়ে পাটুয়ারটেক হয়ে, হিমছড়ি পাহাড় ও জলপ্রপাত দেখার পরে, সূর্যাস্ত দেখতে ইনানী বিচে চলে যান। সূর্যাস্ত দেখে কক্সবাজার ফিরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। আপনি যদি কেনাকাটা করতে চান তাহলে আপনি শেষবারের মতো বার্মিজ বাজারে যেতে পারেন। তারপর আপনার বাসের সময়সূচি অনুযায়ী কাউন্টারে যান এবং ভ্রমণ সম্পন্ন করুন। আপনার গন্তব্যে ফিরে যান।
দ্বিতীয় প্ল্যানঃ
তিন দিন ও দুই রাতের প্ল্যানে যে সব জায়গা ঘুরে দেখবেন তা নিচে দেওয়া হলঃ
- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত (লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী বীচ)
- রামু
- রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড
- মেরিন ড্রাইভ
- হিমছড়ি
- ইনানী সমুদ্র সৈকত
- দরিয়া নগর
- মহেশখালী (আদিনাথ মন্দির, রাখাইন পাড়া ও স্বর্ণ মন্দির)
১ম দিনঃ যেহেতু আপনার হাতে ৩ দিন এবং ২ রাত সময় আছে তাই রাতের বাসে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিন। কক্সবাজার পৌঁছে সকাল ১০-১১ টায় হোটেলে চেক-ইন করুন(রুম ফাকা থাকলে আগেও চেক ইন করতে পারবেন) এবং সমুদ্র দেখতে বেরিয়ে যান। দুপুর পর্যন্ত সমুদ্রের পানিতে গোসল করুন, ছবি তুলুন এবং দুপুর ২টার দিকে হোটেলে ফিরে আসুন। আপনার হোটেলে বা কাছাকাছি কোন রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খান।
খাওয়া শেষে কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর বিকেলে বেরিয়ে পড়ুন সমুদ্র দেখার জন্য।সারা বিকেলটা সমুদ্র সৈকতে কাটিয়ে হোটেলে ফিরে আসুন বা বার্মিজ মার্কেট ঘুরে আসতে পারেন। সন্ধ্যায় আপনি বেছে নিতে পারেন রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষি, নিরিবিলি, বোগদাদিয়া বা আপনার পছন্দের যেকোনো রেস্টুরেন্ট। কক্সবাজার থেকে ঝাউতলা গেলে সেখানে অবস্থিত রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড ঘুরে আসতে পারেন। সকালে সূর্যোদয় দেখতে চাইলে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান।
দ্বিতীয় দিনঃ সকালের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখতে অন্যরকম সুন্দর। এই সৌন্দর্য মিস করবেন না। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে সৈকতে যান। আপনি একটি ভিন্নরকম সৈকত দেখতে পাবেন। তারপর নাস্তা করে হোটেলে ফিরে আসুন। হোটেলে ফ্রেশ হয়ে সিএনজি বা ট্যাক্সি/রিকশা নিয়ে রামু বুদ্ধ বিহারে যেতে পারেন।
রামু যেতে একটি ট্যাক্সি বা রিকশায় সাধারণত জনপ্রতি 40 টাকা ভাড়া নেয় এবং আপনি যদি এটি রিজার্ভ নিতে চান তবে যাওয়া আসা এবং ঘুরা সহ আপনার প্রায় ৪০০-৫০০ টাকা খরচ হবে। অটোরিকশায় ৫-৬ জন অনায়াসে যাতায়াত করতে পারবেন। আপনার হাতে যদি ৩-৪ ঘন্টা সময় থাকে তাহলে আপনি অনেক গুলোই বৌদ্ধ মন্দির পরিদর্শন করতে পারেন।
রামু থেকে দুপুরের মধ্যেই ফিরে আসুন। দুপুরের খাবারের পর অটো বা সিএনজি নিয়ে হিমছড়ি ও ইনানীর উদ্দেশ্যে রওনা দিন। হিমছড়ি এবং ইনানী দেখার জন্য আপনাকে 3 থেকে 4 ঘন্টা সময় দেওয়া উচিত। হিমছড়ি জলপ্রপাত দেখার পরে, সূর্যাস্ত দেখতে ইনানী বীচে চলে যান। সূর্যাস্ত দেখে কক্সবাজা্রে হোটেলে ফিরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন।
ইচ্ছে হলে বাকি সন্ধ্যাটা সমুদ্র সৈকতে কাটান। আপনি যদি কেনাকাটা করতে যেতে চান তবে আপনি বার্মিজ বাজারে যেতে পারেন। রাতে আপনি কক্সবাজারের যে কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন এবং সেখান থেকে সময় করে রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড ঘুরে দেখতে আশাকরছি ভাল লাগবে।
তৃতীয় দিনঃ পরদিন সকালে নাস্তা সেরে ট্রলার ঘাটে চলে যান। ট্রলারে যেতে চাইলে কিংবা স্পিডবোট রিজার্ভ নিতে পারেন । মহেশখালী যান এবং মহেশখালীর দর্শনীয় স্থানগুলি ঘুরে দেখার জন্য একটি ইজিবাইক/রিকশা রিজার্ভ করুন। মহেশখালী ঘুরে কক্সবাজারে ফিরে আসুন। এই শেষ বিকেল এবং সন্ধ্যাটা সৈকতে কাটান ভালো লাগবে। রাতের খাবারের পরে, আপনার বাসের সময় অনুযায়ী কাউন্টারে যান এবং বাসাই ফিরে যান।
হিমছড়ি ও ইনানী বিচ ভ্রমনঃ
কক্সবাজারে ১২ থেকে ২২ কিলোমিটারের মধ্যে দুটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট রয়েছে। তার মধ্যে একটি হিমছড়ি এবং অন্যটি ইনানি বীচ। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ২২ কিলোমিটার দূরে ইনানী সমুদ্র সৈকত। এটি সবচেয়ে আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকতগুলির মধ্যে একটি। আর এই সৈকতে যাওয়ার পথে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে আরেকটি দর্শনীয় পর্যটন স্পট হিমছড়ি পাহাড় ও ঝর্ণা দেখতে পাবেন। সাথে মেরিন ড্রাইভ ফ্রি।
কলাতলী থেকে জীপে চড়ে এই দুই জায়গায় যেতে পারেন। সকাল সকাল বের হয়ে গেলে উভয় যায়গা ঘুরে দুপু্রের মধ্যে কক্সবাজার ফিরে আসা যায়। ভ্রমণের জন্য রিজার্ভ জীপ গাড়ি নিতে খরচ পড়বে প্রায় ২০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। আর লোকাল জীপে করে সেখানে গেলে এই দুই জায়গায় যেতে জনপ্রতি গুনতে হবে ২৫০-৩০০ টাকা।
কক্সবাজার কীভাবে যাবঃ
ঢাকা থেকে সড়ক, ট্রেন এবং আকাশপথে কক্সবাজার যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী কয়েকটি বাসের মধ্যে রয়েছে সৌদিয়া, এস আলম মার্সিডিজ বেঞ্জ, গ্রীন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, এস. আলম পরিবহন, মডার্ন লাইন ইত্যাদি। বাসের ভাড়া এসি,নন এসি, ক্লাস ভেদে সিট প্রতি ১১০০ টাকা থেকে ২৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়।
ঢাকা থেকে ট্রেনে সরাসরি কক্সবাজার যেতে চাইলে কমলাপুর বা ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস বা ট্যুরিস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে ট্রেনে করে কক্সবাজার পৌঁছাতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ট্রেনে করে কক্সবাজার যেতে পারেন।
কমলাপুর বা ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধুলী এবং চট্টলা পোস্টাল ট্রেনে চট্টগ্রাম যাওয়া যায়। এর পরে আপনি বিভিন্ন ধরণের এবং বিভিন্ন মানের বাস পাবেন যেমন এস আলম, হানিফ, ইউনিক ইত্যাদি।
চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা বা দামপাড়া অক্সিজেন মোড় বাসস্টপ থেকে কক্সবাজারের উদ্দ্যেশে বাস ছেড়ে যায়। নন এসি বাসের ভাড়া ৪২০ থেকে ৫০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য চাইলে মাইক্রোবাসও পাওয়া যায়।
এছাড়াও বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স এর ঢাকা থেকে কক্সবাজার সরাসরি ফ্লাইট আছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের বিমান ভাড়া ৪,৫৯৯ টাকা থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়।
কক্সবাজারে থাকার ব্যবস্থাঃ
কক্সবাজার বাংলাদেশের বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র। কক্সবাজার বিশ্বের বৃহত্তম এবং দর্শনীয় সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি হোটেল, মোটেল এবং রিসোর্ট রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অনেক রিসোর্ট, হোটেল ও গেস্টহাউস।
সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০০০ টাকায় কক্সবাজারে থাকা যায়। সিগাল হোটেলের ভাড়া ২২০০ টাকা থেকে ৭০০০ টাকা। শৈবাল হোটেলের ভাড়া ১০০০-৩০০০ টাকা। হোটেল লাবনীর ভাড়া ৬০০-৩,০০০ টাকা। উপলের ভাড়া ১০০০-১৫০০ টাকা। সি ক্রাউনের ভাড়া ৪০০ থেকে ৩০০০ টাকা। জিয়া গেস্ট হাউসের ভাড়া ৪০০ থেকে ২০০০ টাকা।
এছাড়াঅ অন্যন হোটেলের ভাড়া প্রায় একই রকম এবং ফিক্সড। তবে কক্সবাজার ভ্রমণের আগে ফোনে যোগাযোগ করে এবং রিজার্ভেশন ফর্ম পাঠিয়ে হোটেলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ভাল। সরাসরি যেয়েও রুম ভাড়া করা যায়।
খাওয়াদাওয়া ও রেস্টুরেন্টঃ
কক্সবাজারে সব ধরনের ও মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। মিড-রেঞ্জ বাজেটের রেস্টুরেন্টের মধ্যে রয়েছে রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিন্ডি, পৌষি, নিরিবিলি ইত্যাদি। অন্যান জিনিসের মতো, এখানে খাবারের দাম ভ্রমণ মৌসুমে উপর নির্ভর করে কম বা বেশি হতে পারে।
ভাত: ২০-৪০ টাকা, মিক্সড ভর্তা: ৭৫/১৫০/৩০০ টাকা (৮-১০ টা আইটেম), লইট্যা ফ্রাই: ১০০-১২০ টাকা (প্রতি প্লেট ৬-১০ পিস), কোরাল/ভেটকি: ১৫০ টাকা, গরুর মাংস: 1৮০-২০০ টাকা (2 জন শেয়ার করতে পারেন), রপচাঁদা ফ্রাই/রান্না: ৩০০-৪০০ টাকা (বড়, 2 জন খেতে পারবেন), ডাল: ৩০-৬০ টাকা। আপনি লাবণী পয়েন্টের কাছে হান্ডি রেস্টুরেন্টে হায়িদ্রাবাদ বিরিয়ানি ট্রাই করতে পারেন ২০০-২৫০০ টাকায়।
সতর্কতা ও ভ্রমণ টিপসঃ
- আপনার যেকোন সমস্যা হলে ট্যুরিস্ট পুলিশকে কল করুন। হেল্পলাইন +088017 6969 0740
- সস্তা ভ্রমণের জন্য অফ-সিজনে কক্সবাজারে যান
- কেনাকাটা এবং ভাড়ার ক্ষেত্রে দরদাম করে নিন
- রেস্টুরেন্টে কিছু খাওয়ার আগে দাম জিজ্ঞেস করুন
- হোটেল বেছে নেওয়ার আগে হোটেল সম্পর্কে ভালো করে জেনে নিন
সমুদ্রে নামার আগে সতর্কতা ও অন্যান্য তথ্য:
সমুদ্রে নামার আগে আপনি জোয়ার ভাটার সময় জানেন কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন। সৈকতে বিভিন্ন স্থানে ইয়াচি লাইফ গার্ডের বিভিন্ন চিহ্ন এবং পতাকা রয়েছে। জোয়ারে সমুদ্রে সাঁতার কাটা নিরাপদ। যখন জোয়ারের সময় হয় তখন সবুজ পতাকা উত্তোলন করা হয়।
বীচ ফটোগ্রাফি: কক্সবাজারে পর্যটন মৌসুমে শত শত ফটোগ্রাফার সমুদ্র সৈকতের পর্যটকদের ছবি তোলেন। এই ছবিগুলি প্রিন্ট করার এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে পর্যটকদের ফোনে ট্রান্সফার করার ব্যবস্থা রয়েছে। সমুদ্র সৈকতের ফটোগ্রাফারদের প্রত্যেকের একটি আইডি কার্ড রয়েছে। বেশ কয়েকটি স্টুডিও এই কাজের সাথে জড়িত।
সরকারি রেট অনুযায়ী, একটি 4R ফরম্যাটের ছবির দাম ৩০ টাকা। এছাড়াও ছবি তুলে ফোনে ট্রান্সফারের জন্য ছবি প্রতি ৩-৫ টাকা চার্জ করে। সৈকতে এদের প্রভাব দেখা যায়। এই সমুদ্র সৈকত ফটোগ্রাফারদের সাথে ছবি তোলার আগে আইডি কার্ড পরীক্ষা করে নেয়া ভাল।
স্পিডবোট ভ্রমনঃ সৈকতে বেশ কিছু স্পিডবোট রয়েছে। মূল সৈকত থেকে লাবণী পয়েন্টে ছুটে যায় এগুলো এবং ফিরে আসে। ভাড়া এক রাইডের জন্য ২০০-৫০০ টাকা। সুতরাং ভাড়া দরদাম করেই উঠবেন।
বীচ বাইক: কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে বেশ কয়েকটি তিন চাকার বীচ বাইক চলাচল করে। প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্বের এই বাইক ট্যুরের জন্য পর্যটকদের ২৫০-৪০০ টাকা দিতে হয়।
লেখকের মন্তব্যঃ
প্রিয় পাঠক আপনি কি আমাদের সেবাই মুগ্ধ? আপনি কি আপনার চাওয়া তথ্য গুলো পেয়েছেন?যদি আপনি এই পোস্ট পরে আপনার তথ্য পেয়ে থাকেন তাহলে দয়া করে আপনার অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url