১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

  আপনি হয়তো ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক জানার চেষ্টা করছেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কাঙ্খিত তথ্য পাচ্ছেন না। তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। অনুগ্রহ করে এই আর্টিকেলটি পড়বেন। আশা করছি আপনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন নিয়ে যে সকল তথ্য চাচ্ছেন তার সবগুলো আমি তুলে ধরতে পারবো।



এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শুরু ঘটনা। কিভাবে ভাষা আন্দোলন জাতীয় চেতনা রূপ লাভ করে। পাকিস্তানের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে বাঙালির যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং সর্বশেষ যেভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের হলো।

ভূমিকাঃ

ভাষা আন্দোলন ছিল তৎকালীন পূর্ব বংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন। সময়টি ছিল ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত। ভাষা আন্দোলন ছিল ভাষাকে ঘিরে মৌলিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন যা পশ্চিম পাকিস্থানের বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন। এই আন্দোলন বাঙ্গালির জাতিয় চেতনাকে জাগ্রত করে।

ভাষা আন্দোলন কেন হয়েছিলঃ

সময়টি ছিল ১৯৪৭ সাল। ১৯৪৭ সালের করাচীতে অনুষ্ঠিত এক শিক্ষা সম্মেলনে ঘোষণা করা হয় যে উর্দু হবে পাকিস্থানের রাষ্ট্র ভাষা। তাৎক্ষনিক সেই দাবির প্রতিবাদ জানানো হয়। এরপরের বছর মোহাম্মদ আলী জিন্নহা সাহেব ঢাকায় আসেন। ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে এবং ২৪ মার্চ কার্জন হলে ঘোষণা করেন "উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্থানের রাষ্ট্র ভাষা। এতে তাৎক্ষণিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা না না বলে তার প্রতিবাদ জানাই। এখান থেকেই শুরু হয় ভাষা আন্দোলনে।

ভাষা আন্দোলনের পটভূমিঃ

ভাষা আন্দোলন বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়। ব্রিটিশ ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তান এবং ভারত দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তৎকালীন স্বাধীন পাকিস্তানে যেসব আন্দোলন হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি আন্দোলন হচ্ছে ভাষা আন্দোলন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব অনস্বীকার্য।

ভাষা আন্দোলন হয়েছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম একটি রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে। তবে এটি শুধুমাত্র ভাষা আন্দোলনেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও অর্থ সামাজিক উন্নতির প্রচেষ্টা চালানো হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তানের ৫৬% মানুষের মুখের ভাষা বাংলা।

সুতরাং স্বাভাবিকভাবে বাংলা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়ার অন্যতম দাবীদার অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী তা না করে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের ভাষাকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। বাঙালি জাতি তাদের এই সিদ্ধান্তকে মেনে না নিয়ে ভাষা রক্ষায় ছাত্রসমাজ বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় সহ আপামর জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যা ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি একটি অসম্প্রদায়িক জাতীয় চেতনা লাভ করে। যার ফলে ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সূচনা হয়।

ভাষা আন্দোলনের ঘটানা প্রবাহঃ

পূর্ব পাকিস্তান ভাষা বিতর্কঃ পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বেই পাকিস্তানের ভাষা কি হবে সেটা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ১৯৩৭ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা প্রবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এখানে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক বিরোধীতা করে এবং এ বিরোধিতার কারণে জিন্নাহ সাহেব তার কাজে সফল হয়নি।

ভাষাকে কেন্দ্র করে সেই সময় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। ১৯৪৭ সালের ১৭ই মে মজলিসে ইত্তাহাদুল মুসলিমিনের উদ্যোগে হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে চৌধুরী খালেকুজ্জামান ঘোষণা করেন উর্দু হবে পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা। ১৯ সালের জুলাই মাসে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ডক্টর জিয়াউদ্দিন আহমেদ ঘোষণা করেন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে হবে।

এই দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাষাবিদ ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ “ রাষ্ট্রভাষা সমস্যা শীর্ষক” এক প্রবন্ধে জিয়াউদ্দিনের বক্তব্য খন্ডন করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরে। যা দৈনিক আজাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পূর্ব বাংলা জনগণের প্রতিবাদ বিক্ষোভের মাধ্যমে ভাষা আন্দোলন আনুষ্ঠানিক পটভূমি রচিত হয় ।

১৯৪৭ এর ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর পূর্ববাংলার জনগণ ভেবেছিল বাংলায় হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। কারণ তৎকালীন বেশিরভাগ মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা যা প্রায় ৫৬% এর মত অপরদিকে উর্দু ছিল সমগ্র পাকিস্তানের ৩.৩ শতাংশ জনগণের মুখের ভাষা। উর্দু কোন বিশেষ অঞ্চলের ভাষা ছিল না তবুও উর্দুকে বাঙ্গালীদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়।

এটি ছিল পশ্চিমাদের একটি ষড়যন্ত্র। পাকিস্তানিরা ধর্মের দোহাই দিয়ে উর্দুকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরপরই মুদ্রা, ডাকটিকেটে, রেলগাড়ির টিকিটে, বিভিন্ন ধরনের সরকারি ফর্ম এবং অফিস আদালতে ইংরেজি ও উর্দু ভাষার অগ্রাধিকার দেয়া হতো বা ব্যবহার করা হতো।

এর ফলশ্রুতিতে পূর্ব বাংলার শিক্ষিত সচেতন মহল ফুঁসে ওঠে। মূলত এটিই ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রধান কারণ।১৯৪৭ সালের আগস্ট মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতি পর্ব। ১৯৪৮ সালে এ আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে ওঠে এবং একটি সুনির্দিষ্ট আন্দোলনে রূপ নেই। জিন্নাহ সাহেবের ঢাকা ঘোষণার পর ছাত্রদের প্রতিবাদ এই সময়ের সবচেয়ে মুখ্য ঘটনা।

তমুদ্দুন মজলিস গঠনঃ

পাকিস্তান সৃষ্টির পর পাকিস্তান শাসক বৃন্দ পক্ষপাত মূলক ভাষা নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র-যুবক রাজনৈতিক কর্মী বুদ্ধিজীবী সমাজ প্রতিবাদের স্বচ্চর হয়ে ওঠে। এ সময় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বেশ কিছু সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তার মধ্যে তমুদ্দিন মজলিস অন্যতম। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে সংগঠনটির জন্ম হয়েছে।

জন্ম লাভের শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি বাংলা ভাষার জন্য জোরালো অবস্থান গ্রহণ করে। ১৯৪৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্র ও অধ্যাপক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করে। মূলত এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। সাপ্তাহিক সৈনিক ছিল এই সংগঠনের মুখপত্র।

তমুদ্দিন মজলিস পূর্ব বাংলা শিক্ষা, আদালত এবং অফিসে বাংলা ভাষা ব্যবহারের জোর দাবি জানাই। ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তারা একটি প্রকাশনী প্রকাশ করে” পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা নাকি উর্দু” শিরোনামে। এই পুস্তিকায় পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোতাহের হোসেন এবং রাজনীতিবিদ ও সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমেদ দুটি গুরুত্বপূর্ণ লেখা প্রকাশ করেন। এছাড়াও সংগঠনটি বিভিন্ন সভা সমাবেশ করে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা এই যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

করাচির শিক্ষা আন্দোলনঃ

১৯৪৭ সালের ২৭ নভেম্বর করাচিতে এক শিক্ষা সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। এ সম্মেলনে বিবৃতি দেয়া হয় পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। ফলে বিতর্কে সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানের তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী, পূর্ব বাংলা সরকার মন্ত্রী হাবিবুল্লাহ বাহার এবং আব্দুল হামিদ ও এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। ৬ ডিসেম্বর দৈনিক মর্নিং নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী উক্ত সম্মেলনের উদ্যোগে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।

এটাই ছিল পাকিস্তান সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রথম উদ্যোগ। শিক্ষা সম্মেলনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ স্বরূপ ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের এক বিরাট প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন তমুদ্দিন মজলিসের সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কাশেম। বক্তৃতা করেন মনির চৌধুরী, আব্দুর রহমা্‌ এ কে এম আহসান, কল্যাণ দাশগুপ্ত প্রমুখ।

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদঃ 

ভাষ আন্দোলনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। অক্টোবর ১৯৪৭ সালের তমুদ্দিন মজলিসের উদ্যোগে রাষ্ট্রভাষার সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। তমুদ্দিন মজলিস ছাড়াও ছাত্রলীগ, গণতান্ত্রিক যুবলীগ ও কিছু অন্য সংগঠনের কর্মী রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তমুদ্দিন মজলিসের সক্রিয় কর্মী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নুরুল হক ভূঁইয়া এ পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন।

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় মূলত রাষ্ট্রভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এ সংগ্রাম পরিষদ পহেলা ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালের তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী ফজলুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে মানি অর্ডার, ডাকটিকিট ও টাকার চেকে ইংরেজি উর্দুর পাশাপাশি বাংলা লেখার আবেদন করেন। মূলত রাষ্ট্রভাষা পরিষদ গঠনের পর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

গণপরিষদে দাবি উপস্থাপনঃ

২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদ অধিবেশন বসে। উক্ত অধিবেশনে কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত একটি সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করে। তার প্রস্তাব ছিল উর্দু এবং ইংরেজির সাথে বাংলাকেও গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হোক। ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে এ সংশোধনী প্রস্তাবের উপর আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়।

পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর তীব্র প্রতিবাদের কারণে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়। প্রস্তাবটি বাতিল হলেও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে 26 শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধর্মঘট পালন করে।

দুই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালইয়ের ফজলুল হক হলে বিভিন্ন সংগঠনের নেত কর্মীদের নিয়ে কামরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদ বিলুপ্ত করে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয় ।এ পরিষদের আহ্বায়ক হয় শামসুল আলম।

বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিঃ

১৯৫৪ সালের ৯ মে গণপরিষদে এবং ১৯৫৬ সালে সাংবিধানিক ভাবে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়।

লেখকের মন্তব্যঃ

আপনার এই পোস্ট টি পড়ে কেমন লাগল তা কমেন্ট বক্সে জানাবেন এবং যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে পোস্ট টি শেয়ার করে আপনার পরিচিত জনদের জানার সুযোগ দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url